Sunday, August 21, 2016

নদী

নদী
-আনন্দ মোহন

নদী, তুমি বহিয়া যাও আপন মনে
      রুধির ধারার মতন
     মানো নাকো কোন বাধা,সামনে যাহা পাও তাহা নিয়ে ছুটিয়া যাও আপন মনে।
তোমারি গর্ভে বিলীন হয়েছে যে কত জনপদ।
তার কোন ইয়ত্তা নেই
তবুও তুমি থামো না,বহিয়া যাও অনন্তকাল।

নদী, তোমারি ধ্বংস যজ্ঞের শিকার অগণিত সৃষ্টি
তবুও তুমি ছুটিয়া যাও আপন মনে।
কত মনুষ্যের কান্না তুমি দেখিয়াছ নীরবে নিভৃতে
তবুও তুমি থামো না,থামো না।

Thursday, August 18, 2016

মাইক্রোকম্পিউটার

মাইক্রোকম্পিউটার 
মাইক্রোপ্রসেসর একাকী কাজ করতে পারে না। মাইক্রোপ্রসেসর কি কাজ করবে, সে নির্দেশনা রাখার জন্য প্রোগ্রাম মেমোরি (ROM) দরকার হয়। আবার যে ডাটাকে বিশ্লেষণ করবে সে ডাটা পাওয়ার জন্য মাইক্রোপ্রসেসরের সথে ডাটা মেমোরি (RAM) অথবা ইনপুট ডিভাইস যুক্ত থাকা আবশ্যক। সর্বশেষ বিশ্লেষণকৃত ডাটা সরবরাহ করতে মাইক্রোপ্রসেসরের সথে আউটপুট ডিভাইস সংযুক্ত থাকতে হবে।
এভাবে মাইক্রোপ্রসেসর দিয়ে কাজ করার পরিবেশ তৈরি করার জন্য এর সাথে মেমোরি, ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস সংযোগ করলে যে সিস্টেম তৈরি হয়, সেটাকে বলা হয় মাইক্রোকম্পিউটার।
মাইক্রোকম্পিউটারের মৌলিক অংশ হল ৪ টি।
ক) ইনপুট ডিভাইস
খ) মাইক্রোপ্রসেসর
গ) মেমোরি
ঘ) আউটপুট ডিভাইস
তবে এগুলো ছাড়াও মাইক্রোকম্পিউটারের সাথে A/D কনভার্টার, টাইমার/কাউন্টার, D/A কনভার্টার ইত্যাদি বিভিন্ন অংশ যুক্ত থাকতে পারে।
ছবিতে, মাইক্রোকম্পিউটার Diagram

মাইক্রোপ্রসেসর

মাইক্রোপ্রসেসর  হল রেজিস্টার (Register) দিয়ে তৈরি programmable ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, যেটি ব্যবহারকারী কর্তৃক মেমোরিতে লোড করা নির্দেশনা অনুযায়ি input ডিজিটাল ডাটাকে বিশ্লেষণ (গাণিতিক অথবা লজিকাল বিশ্লেষণ) করে ফলাফল প্রদান করে।
,
ছবিতে মাইক্রোপ্রসেসর

Wednesday, August 17, 2016

মাইক্রোকন্ট্রোলার (Microcontroller)

মাইক্রোকন্ট্রোলার (Microcontroller)
, একে বলা হয়
কম্পিউটার IC (Integrated Circuit) অর্থাৎ একটি IC এর
ভেতরে কম্পিউটার (Computer in a single chip).
কম্পিউটারের অভ্যন্তরে যেমন মাইক্রোপ্রসেসর,
RAM, ROM, serial port, I/O port, timer/counter ইত্যাদি থাকে।
তেমনি মাইক্রোকন্ট্রোলারের ভিতরেও এ সব কিছুই
থাকে। কম্পিউটার দিয়ে আপনি যেমন অনেক জটিল জটিল
সমস্যা নিমেষেই সমাধান করে ফেলতে পারেন, তেমনি
মাইক্রোকন্ট্রোলার দিয়ে আপনি অনেক জটিল জটিল
ইলেক্ট্রনিক প্রোজেক্ট তৈরি করে ফেলতে পারবেন
সহজেই। মাইক্রোকন্ট্রোলার (Microcontroller)
সম্পর্কে জানা থাকলে রবোটিক্স, অটোমেশন,
কন্ট্রোল সিস্টেম, সিকিউরিটি সিস্টেম ইত্যাদি যে কোন
বিষয়ক প্রোজেক্টকে আপনার কাছে ছেলে খেলাই
মনে হবে।

মাইক্রোকন্ট্রোলারেরের ফিচার গুলো হলঃ

১। ইনপুট আউটপুট কন্ট্রোলার
২। এনালগ টু ডিজিটাল কনভার্টার (এ,ডি,সি)
৩। টাইমার
৪। কাউন্টার
৫। পি,ডাবলিও, এম
৬। ইউ, এস, এ, আর, টি
৭। টিএক্স, আরএক্স

★★★সাথেই থাকুন,মাইক্রোকন্ট্রোলার নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে বিস্তারিত আলোচনা করব★★★

"সফলতা"

সফলতা বা SuccesS

সফলতা বা Success, যা সবাই অর্জন করে নিতে পারে না।এর পিছনে অনেক কারণ আছে কেউ পারে না নিজের অনীহার কারণে,কেউ পারে না তার নিজের আত্মবিশ্বাস এর অভাব এর কারণে আবার কেউ পারে না নিজের ডিপ্রেশন বা হতাশার কারণে।

তো যেটা না বললেই নয়, সেটা হচ্ছে সফল কেউ আপনা আপনি হয় না।তারজন্য প্রয়োজন হয় নিজের সর্বোচ্চ ইচ্ছাশক্তি,মনোবল, একননিষ্ঠতা,একাগ্রতা সব শেষে যেটা বেশী প্রয়োজন সেটা হলো অধ্যবসায়।আরো একটা জিনিষ প্রয়োজন সেটা হল অন্যকে(যারা জীবনযুদ্ধে সফলল) অনুসরণ করা কিন্তু তাকে অনুকরণ করে নয়।মনে রাখবেন, "সূর্যকে প্রণাম নয় তার আলো গায়ে মাখতে হবে"।  মানব জীবনের সার্থকতা সেখানেই, যেখানে আপনি আপনার নিজের অবস্থানে সফল।সফল হতে নিজের ইচ্ছাশক্তির চেয়ে বেশী কোন কিছুই প্রভাবক হিসেবে কাজ করে না।আপনি লক্ষ্য করলে দেখবেন এই মহামানব জীবনে কেউ মুহূর্তে সফল হতে পারে নি।বরংবার চেষ্ঠার ফলই ওই ব্যাক্তিকে একটা নির্দিষ্ট সফল ফ্রেমে বন্ধী করেছে।নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে যান সফলতা অবধারিত।

সফলতা সম্পর্কে আর্ল নাইটিংগেল বলেছিলেন- "একটি যথার্থ উদ্দেশ্য
উত্তেরাত্তর উপলব্ধির নামই সফলতা"।
                          উৎসর্গীকরণে-
                                 "আনন্দ মোহন"




Sunday, August 14, 2016

পাঞ্জেরী

পাঞ্জেরী
-ফররুখ আহম্মদ 
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?
সেতারা, হেলাল এখনো ওঠেনি জেগে?
তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
দীঘল রাতের শ্রান্তসফর শেষে
কোন দরিয়ার কালো দিগন্তে আমরা পড়েছি এসে?
এ কী ঘন-সিয়া জিন্দেগানীর বা’ব
তোলে মর্সিয়া ব্যথিত দিলের তুফান-শ্রান্ত খা’ব
অস্ফুট হয়ে ক্রমে ডুবে যায় জীবনের জয়ভেরী।
তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
সম্মুখে শুধু অসীম কুয়াশা হেরি।
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
বন্দরে বসে যাত্রীরা দিন গোনে,
বুঝি মৌসুমী হাওয়ায় মোদের জাহাজের ধ্বনি শোনে,
বুঝি কুয়াশায়, জোছনা- মায়ায় জাহাজের পাল দেখে।
আহা, পেরেশান মুসাফির দল।
দরিয়া কিনারে জাগে তক্দিরে
নিরাশায় ছবি এঁকে!
পথহারা এই দরিয়া- সোঁতারা ঘুরে
চলেছি কোথায়? কোন সীমাহীন দূরে?
তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
একাকী রাতের ম্লান জুলমাত হেরি!
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
শুধু গাফলতে শুধু খেয়ালের ভুলে,
দরিয়া- অথই ভ্রান্তি- নিয়াছি ভুলে,
আমাদেরি ভুলে পানির কিনারে মুসাফির দল বসি দেখেছে সভয়ে অস্ত গিয়াছে তাদের সেতারা, শশী।
মোদের খেলায় ধুলায় লুটায়ে পড়ি।
কেটেছে তাদের দুর্ভাগ্যের বিস্বাদ শর্বরী।
সওদাগরের দল মাঝে মোরা ওঠায়েছি আহাজারি,
ঘরে ঘরে ওঠে ক্রন্দনধ্বনি আওয়াজ শুনছি তারি।
ওকি বাতাসের হাহাকার,- ও কি
রোনাজারি ক্ষুধিতের!
ও কি দরিয়ার গর্জন,- ও কি বেদনা মজলুমের!
ও কি ধাতুর পাঁজরায় বাজে মৃত্যুর জয়ভেরী।
পাঞ্জেরি!
জাগো বন্দরে কৈফিয়তের তীব্র ভ্রুকুটি হেরি,
জাগো অগণন ক্ষুধিত মুখের নীরব ভ্রুকুটি হেরি!
দেখ চেয়ে দেখ সূর্য ওঠার কত দেরি, কত দেরি!

Saturday, August 13, 2016

বৃষ্টি ও পাপবোধ ☺

বৃষ্টি ও পাপবোধ
         -হিমাদ্রি মোহন 
একটা বৃষ্টি বদলে দেবে সব 
তোলপাড় জাগবে
জাগবে সবাই --
অভিন্ন আকাশের নিচে
মৃত, অর্ধমৃত পাপবোধ 
ভেসে যাবে।

একটা বৃষ্টি চাই 
তোমার আমার অনাকাঙ্ক্ষিত মন্দ
ভাসিয়ে দেব বলে।


***আপনার রুচির সন্তুষ্টিই আমাদের সার্থকতা। পাশে থাকবেন।***

অকাল শ্রাবণ


"অকাল শ্রাবণ"

              -হিমাদ্রি মোহন 
মেঘলা আকাশ
অকাল শ্রাবণ 
অঝোর ধারায়
অবিরাম বর্ষণ!
জল থইথই মাঠ
মনের দরজা হাট।

নূপুরের রিনিঝিনি
তুমিই এলে জানি 
জানলেই বা কি হবে!
বৃষ্টি নেমেছে সবে

তপ্ত আদুর গায়ে
বৃষ্টি শীতল পায়ে
নেচে নেচে চলে যায় 
পুলকিত ইশারায়।

বৃষ্টির কাছে ঋণী
তুমি থাকবে সারাদিনই
আমার আউল বাউল মন
কেবল কাঁদে সর্বক্ষণ।

বিদ্যুৎ চমকায়
সম্বিৎ ফিরে পায়।
তুমি বৃষ্টি ধারায় থেকো 
আর আমায় মনে রেখো। 

মেঘ বৃষ্টির খেলা
আমার কাটে সারাবেলা
তুমি এসেই বলো যাই...... 
আমার ভাল্লাগেনা, ছাই!

আমার ছিলেকোঠার ছাদে
এ মন যে শুধুই কাঁদে
কান্না শেষে হাসি
তবে কি তোমায় ভালোবাসি!

Thursday, August 11, 2016

অবুঝ খোকা

                    অবুঝ খোকা
                                  -মোহন
      আমি কাঁদতে কাঁদতে হাসতে পারি,
      হাসতে হাসতে কাঁদি।
      আমি দু:খটাকে সঙ্গী করে,সুখের বসত বাঁধি
      আমি চিনতে চিনতে ইচ্ছে করেই,
      আবার করি ভুল।
      আমি বাতাসে উড়িয়ে চম্পা বকুল,
      আবার ফোটাই ফুল।
      শুধু তোমার কাছে গেলেই,
      অবুঝ খোকা হয়ে যাই।
     তোমার মাঝে দিও আমায় একটু খানি ঠাঁই
      আমি পুড়তে পুড়তে ইচ্ছে হলেই
      আবার শীতল হই।
      আমি সবার মাঝে আপন,
      আবার আপন কারো নই।
      আমি থাকতে পারি সন্নিকটে,আবার বহুদূর।
     আমি চেনা গানের ছন্দ ভূলে আবার করি সুর
     আমি বিষধর সাপের ফণা থেকে,
      আনতে পারি মণি।
      আমি দৈনিক কাগজের শিরোণাম এ,
      হতে পারি শিরোমণি।
      শুধু তোমার কাছে গেলেই,
      অবুঝ খোকা হয়ে যাই।
      তোমার মাঝে দিও আমায় একটুখানি ঠাঁই।
   

বিবর্তনবাদের ইতিহাস

বিবর্তনবাদের ইতিহাস: 
পৃথিবীর সৃষ্টি তপ্ত গলিত লাভা থেকে।এই আগুনের গলিত তপ্ত পিন্ড হাজার হাজার বছর পর ঠান্ডা হয়ে আজকের এই সুন্দর পৃথিবী।যেখানে দেখা মিলে নদী,পাহাড়,সমুদ্র,ঝ্রণা,রংধনুর সাত রঙে ভরা আকাশ সহ আরো কত কি ...... 

প্রাণের সঞ্চার:
পৃথিবী জন্ম হওয়ার প্রায় একশত কোটি বছর পর জলের মধ্যে তৈরী হল প্রোটোপ্লাজম।যা নানা ধরণের মৌলিক জিনিষ দিয়ে তৈরী হয়েছিল।আমার ভাষায়,”লাইফ ইজ নাথিং বাট দ্যা এক্টিভিটিস অফ প্রোটোপ্লাজম”। এই কোষ প্রথমত একটি মানে, এককোষী প্রাণের সৃষ্টি ওখান থেকেই।এরপর অনেক কোষগুলো একত্রিত হয়ে আস্তে আস্তে বৃহৎ দেহের সৃষ্টি করে।

এগুলোর আবার কিছু কোষ থেকে দুটি,দুটি থেকে চারটি এভাবে তারা নিজেদের বংশ বাড়াতে লাগল।এগুলো প্রতিনিয়ত এমন ভাবে বড় হচ্ছিল যেটা বোঝার উপায় নেই যে আসলে আপাত দৃষ্টি তে মনে হয় সৃষ্টির আদি থেকেই এরা এত বড় ছিল।

মাছরাই হল পৃথিবীর প্রথম মেরুদণ্ডী প্রানী।যাদের থেকে অনেক বছর ধরে বিবর্তনের মাধ্যমে আজকে আমরা বিভিন্ন মেরুদণ্ডী,অমেরুদণ্ডী সহ প্রাণী জগতের ৯ টি পর্বের প্রানীরা এসেছি।কিন্তু এই বিবর্তনের ও অনেক ধাপ রয়েছে।এরা যথাক্রমে উভচর, সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী।

যাদের মধ্যে সরীসৃপ পর্বের ডাইনোসরগোষ্ঠী'ই পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে অতিকায় জানোয়ার।দুঃস্বপ্নের মত এদের চেহারা।ডিপ্লোডোকাস প্রজাতির ডাইনোসর লম্বায় ৫৮ হাত।এরা অতিকায় হলেও বুদ্ধিটা নেহায়েত খাটো।আমার আর আপনার মতো না।কারণ,এদের মগজের গঠন।এদের মগজ অতিকায় দেহের তুলনায় অনেক ছোট।আমার আর আপনার মত নয়।জানেন তো মানুষের মগজ ওজনে দেড় কেজি পর্যন্ত হয়।এই মগজ ও কিন্তু বিবর্তনের মাধ্যমে উন্নত হয়েছে।কারণ, সৃষ্টির আদি প্রাণিটি একটি কোষ দিয়ে গঠিত।সেখানে তার মগজ তো নগণ্যই।সে থেকে আস্তে আস্তে মাছ,টিকটিকি,ডাইনোসর,গরিলা,বন মানুষ(আধা-মানুষহোমিনিড), মুরগী,ইদুর ইত্যাদি ইত্যাদি এসেছে মানে আস্তে আস্তে তাদের মগজের উন্নতি হচ্ছে।আকারে যেমন বড় হচ্ছে তেমনি বুদ্ধিতেও।

আস্তে আস্তে মানুষ তার প্রয়োজনের তাগিদে শিখল আগুন জ্বালানো, শিখল শিকার করা,শিখল দলবদ্ধ ভাবে বেঁচে থাকতে।তখন তাদের কোন শত্রু ছিল না,ছিল সবাই ভাই-ভাই।এরপর আস্তে আস্তে মানুষের মস্তিষ্কের উন্নতি হতে লাগলল।তারা শিখে যেতে লাগল কিভাবে উন্নত হাতিয়ার ব্যবহার করা যায়।অর্থাৎ,  বন্য থেকে সভ্য হতে লাগল।

এরপর আস্তে আস্তে তারা নিজেরা নিজেদের মধ্যে সবকিছু নিয়ে ভাগাভাগি খুঁজতে শুরু করল।তাদের মধ্যে এখন আর আগের সমান অধিকার নেই তারা  একে অন্যের থেকে উর্ধাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার উপায় খুঁজতে লাগল।যার কারণে শুরু হয় নানা রকম হাঙামা।তবে এগুলো একদিনে হয় নি, হাজার হাজার বছর অতিক্রম করে,বিভিন্ন সভ্যতা (মিশরীয় সভ্যতা,দ্রাবিড় সভ্যতা, বৈদিক সভ্যতা,গ্রীক সভ্যতা) পেরিয়ে মানুষ আজ বড় হওয়ার লড়াইয়ে মেতেছে।তারা চায় একে অপরের ক্রীতদাস হয়ে থাকুক।মুনাফার লড়াইয়ে তারা আজ হন্য।

যাইহোক মানুষ তার বুদ্ধি আর উন্নত মস্তিষ্কের দ্বারা, মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ গড়ে উঠেছে আধুনিক সভ্যতা।
                                                 তথ্য প্রদানে   -আনন্দ মোহন।      
         ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজি চিটাগাং।             
     

Wednesday, August 10, 2016

কেউ কথা রাখেনি

               কেউ কথা রাখে নি
                 সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় 
কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি
ছেলেবেলায় এক বোষ্টুমী তার আগমনী গান হঠাৎ থামিয়ে বলেছিল
শুক্লা দ্বাদশীর দিন অন্তরাটুকু শুনিয়ে যাবে
তারপর কত চন্দ্রভূক অমাবস্যা চলে গেলো, কিন্তু সেই বোষ্টুমী
আর এলোনা
পঁচিশ বছর প্রতিক্ষায় আছি।
মামা বাড়ির মাঝি নাদের আলী বলেছিল, বড় হও দাদাঠাকুর
তোমাকে আমি তিন প্রহরের বিল দেখাতে নিয়ে যাবো
সেখানে পদ্মফুলের মাথায় সাপ আর ভ্রমর
খেলা করে!
নাদের আলী, আমি আর কত বড় হবো?  আমার মাথা এ ঘরের ছাদ
ফুঁড়ে আকাশ স্পর্শ করলে তারপর তুমি আমায়
তিন প্রহরের বিল দেখাবে?
একটাও রয়্যাল গুলি কিনতে পারিনি কখনো
লাঠি-লজেন্স দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে লস্করবাড়ির ছেলেরা
ভিখারীর মতন চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে দেখেছি
ভিতরে রাস-উৎসব
অবিরল রঙের ধারার মধ্যে সুবর্ণ কঙ্কণ পরা ফর্সা রমণীরা
কত রকম আমোদে হেসেছে
আমার দিকে তারা ফিরেও চায়নি!
বাবা আমার কাঁধ ছুঁয়ে বলেছিলেন, দেখিস, একদিন, আমরাও…
বাবা এখন অন্ধ, আমাদের দেখা হয়নি কিছুই
সেই রয়্যাল গুলি, সেই লাঠি-লজেন্স, সেই রাস-উৎসব
আমায় কেউ ফিরিয়ে দেবেনা!
বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে বরুণা বলেছিল,
যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে
সেদিন আমার বুকেও এ-রকম আতরের গন্ধ হবে!
ভালোবাসার জন্য আমি হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়েছি
দূরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড়
বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮টা নীল পদ্ম
তবু কথা রাখেনি বরুণা, এখন তার বুকে শুধুই মাংসের গন্ধ
এখনো সে যে-কোনো নারী।
কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটল, কেউ কথা রাখে না!