২০০৩ সাল।তখন আমি ক্লাস থ্রি তে পড়ি,এরোপ্লেন সম্পর্কে বইয়ে অনেক পড়েছি এমনকি ওটার যন্ত্রাংশের নাম সমূহসহ।কিন্তু তখন পর্যন্ত বাস্তবে এরোপ্লেন দেখা শুধুমাত্র আকাশ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল।ভূমিবিষ্ট এরোপ্লেন দেখার সৌভাগ্য হয়নি।
সেবার ছিল জানুয়ারির প্রথম দিক,আমার বড় কাকু আমেরিকা(ইউএসএ) ফেরত হবে।বাবা কথা দিয়েছিল যদি আমি ক্লাসে ফার্স্ট হতে পারি তবে আমার বাবার সাথে কাকুকে রিসিভ করার জন্য বিমান বন্দরে যাওয়ার সুযোগ হবে।এইদিকে আমার রেজাল্ট পাব্লিশ হল, ফার্স্ট হতে না পারলেও সেকেন্ড হয়েছিলাম।যাইহোক বাবা নিজের কথা রাখলেন মানে, প্রথম বারের মত আমি এয়ারপোর্ট এ যাচ্ছি।আমি তো মহাখুশি এতদিন শুধুই বিমানকে আকাশপথে দেখে অবাক হতাম এখন একেবারে বন্দরে বিমান এর ল্যান্ডিং সরাসরি দেখতে পাব।সবকিছু মিলিয়ে আমার কৌতূহল আর উদ্দীপনা একেবারেই তুঙ্গে।এইদিকে বছরের প্রথম দিক হওয়ায় লেখাপড়ার কোন রকম চাপ ছিল না পুরোপুরিভাবে বলা যায় খোশ মেজাজে।
সব কিছু মিলিয়ে আমাকে আর পায় কে অবস্থা।
অবশেষে আজ ১৭ই জানুয়ারি ২০০৩ মানে আমার জন্য সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। সকাল ৯ টার ভিতর ই আমরা শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে উপস্থিত হয়ে গেলাম।বন্দরে এসে আমার কৌতুহল এর কমতি ছিল না,আমি চারদিক ঘুরে ঘুরে অনেক কিছুই দেখেছি।রাডার,কিছু অপেক্ষমাণ হেলিকাপ্টার, ছোট বিমান, সব কিছু মিলিয়ে আমার জন্য ছিল সেটা অপূর্ব মূহুর্ত। টিকিট কেটে আমরা সবাই একেবারে ল্যান্ডিং ফিল্ড এ উপস্থিত হয়ে গেছি।(তখন টিকিট কেটে ওখান পর্যন্ত যাওয়া বৈধ ছিল)
৯:৩০ কি তার একটু পরেই আমি প্রচণ্ড শব্দ শুনে অবাক হলাম আর ভাবতে লাগলাম ভাগ্যিস এইগুলো আমাদের থেকে অনেক অনেক উঁচুতে উড়ে তা না হলে দুর্বিষহ অবস্থা হত।এসব ভাবতে ভাবতে বিমান রানওয়েতে চলে আসল,ওই মূহুর্তে তখনও আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে আমি আসলেই বিজ্ঞানের অনেক কাছেই,প্রযুক্তি আমার চোখের সামনেই।
সবশেষে আরো কিছু মনে রাখার মূহুর্ত ব্যায় করার পর আমরা নিজ গন্তব্যে ফিরে আসি।ভাবতেই অবাক লাগে যেটা ছোট বেলার কৌতুহল ছিল এখন আমি, আমরা সেটা নিয়েই বিশ্লেষণ করে যাই প্রতিনিয়ত।
***ছোট বেলার কৌতুহলী জীবনথেকে সব কিছু নেওয়ার চেষ্টা করলেও সব উঠিয়ে আনা সম্ভব হয় নি।মেধা বিকশিত হয় আবার লোপ ও পায়।***
No comments:
Post a Comment